সম্পাদকীয়(সংস্কার: নভেম্বর-ডিসেম্বর 2021)মহামারী। প্যানডেমিক। করোনা কাল। করোনায় কেড়ে নিল প্রায় দু'টি বছরের চেয়েও বেশি সময়। ২০২০ সালে করোনাকালের লকডাউনের কথা স্মৃতি হয়ে আজও সমাজের প্রতিটি মানুষের মধ্যে.......
বিস্তারিত পড়ুননভেম্বর-ডিসেম্বর2021(আয়াত নং: ১৯ থেকে ৩১)১৯. মহাকাশ এবং পৃথিবীতে যারাই আছে সবাই তাঁর। তাঁর কাছে যারা রয়েছে তারা তাঁর ইবাদতের ব্যাপারে অহংকার করে না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না।২০. তারা তাঁর তসবিহ করে, রা.......
বিস্তারিত পড়ুনওমর ইবনু খাত্তাব রা. হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালার উপর এমনভাবে তাওয়াক্কুল করতে আরম্ভ কর যেমন তাওয়াক্কুলের হক রয়েছে তবে তোমাদেরকে.......
বিস্তারিত পড়ুন(জুলাই ২০২০ সংখ্যা এর পর)
তিন. নিজের দোষকে আড়াল করা:
একজন অহংকারী তার স্বীয় কাজ কর্মে নিজের মধ্যে যে সব দুর্বলতা অনুভব করে, তা গোপন রাখতে আগ্রহী হয়। কারণ, তার আসল চরিত্র যদি মানুষ জেনে যায়, তাহলে তারা তাকে আর বড় মনে করবে না ও তাকে সম্মান দেবে না। যেহেতু একজন অহংকারী সব সময় মানুষের চোখে বড় হতে চায়, এ কারণে সে পছন্দ করে, তার মধ্যে যে সব দুর্বলতা আছে, তা যেন কারো নিকট প্রকাশ না পায় এবং কেউ যাতে জানতে না পারে। কিন্তু মূলত: সে তার অহংকার দ্বারা নিজেকে অপমানই করে, মানুষকে সে নিজেই তার গোপনীয় বিষয়ের দিকে পথ দেখায়। কারণ, সে যখন নিজেকে বড় করে দেখায়, তখন মানুষ তার বাস্তব অবস্থা জানার জন্য তার সম্পর্কে গবেষণা করতে আরম্ভ করে, তার কোথায় কি আছে, না আছে তা অনুসন্ধান করতে থাকে। তখন তার আসল চেহারা প্রকাশ পায়, আসল রূপ খুলে যায়, তার যাবতীয় দুর্বলতা প্রকাশ পায় এবং তার অবস্থান সম্পর্কে মানুষ বুঝতে পারে। ফলে মানুষ আর তাকে শ্রদ্ধা করে না, বড় করে দেখে না, তাকে নিকৃষ্ট মনে করে এবং ঘৃণা করে। একজন অহংকারী ইচ্ছা করলে তার দোষগুণ গুলো বিনয়, নম্রতা, মানুষের সাথে বন্ধুত্ব ও চুপ-চাপ থাকার মাধ্যমে গোপন রাখতে পারত, কিন্তু তা না করে অহংকার করার কারণে তার সব গোমর ফাঁস হয়ে যায়। এ ছাড়াও মানুষ যা পছন্দ করে না, তা নিয়ে দু:খ প্রকাশ করা, কোনো বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করা হতে দূরে থাকা এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য মিথ্যা দাবি করা হতে বিরত থাকার মাধ্যমে, সে তার যাবতীয় দুর্বলতা ও গোপন বিষয়গুলো ধামা-চাপা দিতে পারত। কিন্তু তা না করে সে অহংকার করাতে তার অবস্থা আরও প্রতিকূলে গেল এবং ফলাফল তার বিপক্ষে চলে গেল। তার বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে তার যাবতীয় অপকর্ম মানুষ জানতে পারল।
চার. অহংকারী যেভাবে অহংকারের সুযোগ পায়:
কতক লোকের অধিক বিনয়ের কারণে অহংকারীরা অহংকারের সুযোগ পায়। অহংকারীরা যখনই কোনো সুযোগ পায়, তা তারা কাজে লাগাতে কার্পণ্য করে না। অনেক সময় দেখা যায় কিছু লোক এমন আছে, যারা বিনয় করতে গিয়ে অধিক বাড়াবাড়ি করে, তারা নিজেদের খুব ছোট মনে করে, নিজেকে যে কোনো প্রকার দায়িত্ব আদায়ের অযোগ্য বিবেচনা করে এবং যে কোনো ধরনের আমানতদারিতা রক্ষা করতে সে অক্ষম বলে দাবি করে, তখন অহংকারী চিন্তা করে এরা সবাইতো নিজেদের অযোগ্য ও আমাকে যোগ্য মনে করছে, প্রকারান্তরে তারা সবাই আমার মর্যাদাকে স্বীকার করছে, তাহলে আমিই এসব কাজের জন্য একমাত্র যোগ্য ও উপযুক্ত ব্যক্তি। সুতরাং আমিতো তাদের সবার ওপর নেতা। শয়তান তাকে এভাবে প্রলোভন দিতে ও ফুঁসলাতে থাকে, আর লোকটি নিজে নিজে ফুলতে থাকে। ফলে এখন সে অহংকার বশতঃ আর কাউকে পাত্তা দেয় না সবাইকে নিকৃষ্ট মনে করে। আর নিজেকে যোগ্য মনে করে।
পাঁচ. মানুষকে মূল্যায়ন করতে না জানা:
মানুষ শ্রেষ্ঠ হওয়ার মানদণ্ড কি এবং মানুষকে কিসের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করতে হবে, তা আমাদের অবশ্যই জানা থাকতে হবে। অহংকারের অন্যতম কারণ হলো, মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের মানদণ্ড নির্ধারণে ত্র“টি করা। একজন মানুষ শ্রেষ্ঠ হওয়ার মানদণ্ড কি তা আমাদের অনেকেরই অজানা। যার কারণে তুমি দেখতে পাবে, যারা ধনী ও পদ মর্যাদার অধিকারী তাদের প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে, যদিও তারা পাপী বা অপরাধী হয়। অন্যদিকে একজন পরহেজগার, মুত্তাকী ও সৎ লোক তার ধন সম্পদ ও পদমর্যাদা না থাকাতে সমাজে তাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না এবং তাকে মূল্যায়ন করা হয় না। অনৈতিক, চোর, বাটপার যাদের অগ্রাধিকার দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়, বর্তমান সমাজে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কারণে বা অনুুপযুক্ত ও অযোগ্য ব্যক্তিদের দায়িত্ব বা নেতৃত্ব দেওয়ার কারণেই বর্তমান সমাজের করুণ অবস্থা। স্বার্থান্বেষী ও ভোগবাদীরা সমাজের হোমরাচোমরা হওয়ার কারণে তারা অন্যদের নিকৃষ্ট মনে করে এবং তাদের ওপর বড়াই দেখায় ও অহংকার করে। ইসলাম মানুষকে মূল্যায়নের একটি মাপকাঠি ও মানদণ্ড নির্ধারণ করে দিয়েছে। বর্তমান সমাজে যদি তা অনুসরণ করা হত, তবে সামাজিক অবক্ষয় সম্পূর্ণ দূর হয়ে যেত এবং সমাজের এ করুণ পরিণতি হতে মানব জাতি রক্ষা পেত। (ক্রমশ)