সম্পাদকীয়(সংস্কার: নভেম্বর-ডিসেম্বর 2021)মহামারী। প্যানডেমিক। করোনা কাল। করোনায় কেড়ে নিল প্রায় দু'টি বছরের চেয়েও বেশি সময়। ২০২০ সালে করোনাকালের লকডাউনের কথা স্মৃতি হয়ে আজও সমাজের প্রতিটি মানুষের মধ্যে.......
বিস্তারিত পড়ুননভেম্বর-ডিসেম্বর2021(আয়াত নং: ১৯ থেকে ৩১)১৯. মহাকাশ এবং পৃথিবীতে যারাই আছে সবাই তাঁর। তাঁর কাছে যারা রয়েছে তারা তাঁর ইবাদতের ব্যাপারে অহংকার করে না এবং ক্লান্তিও বোধ করে না।২০. তারা তাঁর তসবিহ করে, রা.......
বিস্তারিত পড়ুনওমর ইবনু খাত্তাব রা. হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালার উপর এমনভাবে তাওয়াক্কুল করতে আরম্ভ কর যেমন তাওয়াক্কুলের হক রয়েছে তবে তোমাদেরকে.......
বিস্তারিত পড়ুনজীবনরক্ষাকারী ওষুধও এখন ভেজাল এবং মানহীন। এসব ভেজাল ও নকল ওষুধ সেবন করে রোগবালাই থেকে মুক্তি মেলা দূরের কথা, উল্টো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। নকল ও ভেজাল ওষুধ নিয়ে কথা কম হয়নি। বিপরীতে ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনা তেমন একটি নজরে পড়ে না। ওষুধে ভেজাল কোনো ভাবে মেনে নেয়া যায় না। মানহীন ও ভেজাল ওষুধ সেবনে আরোগ্যের বদলে বাড়ছে অসুস্থতা।
দেশে ওষুধের উৎপাদন থেকে বিপণন কোনো স্তরেই সরকারি পরীক্ষাগারে মান নিয়ন্ত্রণের তেমন কার্যকর ব্যবস্থা এখনো গড়ে ওঠেনি। বিপণনের পর বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষাগারে পাঠান অধিদফতরের কর্মকর্তারা। তখন জানা যায় ওষুধের মান। এর আগে মান না জানা ওষুধই সেবন করতে হয় রোগীদের।
এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রতি বছর ১২ হাজার রকম ওষুধ বাজারে আসছে। কিন্তু ওষুধ প্রশাসনে যে জনবল ও যন্ত্রপাতি রয়েছে, তাতে সাড়ে তিন হাজার ওষুধের নমুনা পরীক্ষা করার সক্ষমতা রয়েছে সংস্থাটির। বাকি ৭০ শতাংশ ওষুধের মান যাচাই হীন অবস্থায় রয়ে যায়। এ দিকে দিন দিন বাড়ছে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ তৈরী ও বাজারজাতের প্রবণতা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ওষুধ উদ্ভাবনকারী ছাড়া জেনেরিক বা বর্গনামে ওষুধ প্রস্তুত করাই হচ্ছে নকল ওষুধ। তৃতীয় বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বর্গনামে ওষুধ প্রস্তুত চলছে। ফলে ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। অনেক কোম্পানী জেনেশুনে জনস্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এ অনৈতিক কাজে জড়িত। অথচ বাংলাদেশে ওষুধ একটি বিকাশমান শিল্প। ১২৭টি দেশে আমাদের তৈরী ওষুধ রফতানি হচ্ছে। জটিল অনেক রোগের ওষুধও এখন আমাদের দেশেই উৎপাদন হয়। এতে সাশ্রয় হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার। সার্বিক বিবেচনায় শুধু জনস্বাস্থ্যই নয়, ওষুধ কোম্পানীগুলোর নিজেদের স্বার্থেও ওষুধের মান ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরী।
বিগত সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছিলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস (জিএমপি) গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করায় এবং ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনের দায়ে ৮৬টি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স সাময়িক এবং ১৯টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদনে ২০১৬ সালের জানুয়ারী থেকে ৬১টি পদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল ও ১৪টি পদের রেজিস্ট্রেশন সাময়িক বাতিলসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
মনে রাখা দরকার, ওষুধ সাধারণ কোনো পণ্য নয়। সুস্থতার জন্য ওষুধের গুরুত্ব অপরিসীম। এ জন্য ওষুধ কোম্পানিগুলো যাতে মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে তা তীক্ষè নজরদারিতে রাখতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে সরকারের অর্জন কম নয়; কিন্তু স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে তা ব্যর্থ হোক এটি কারো প্রত্যাশা হতে পারে না। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ বিষয়ে সরকারের কঠোর অবস্থান দেখতে চান দেশবাসী।
হাসপাতালগুলোতে ওষুধ কোম্পানীর মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসার সময় মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের তৎপরতা লক্ষণীয়। তাদের অনিয়ন্ত্রিত ঘোরাফেরায় অনেক সময় চিকিৎসকেরাও অস্বস্তিতে পড়েন। অনেক সময় রিপ্রেজেন্টেটিভদের পীড়াপীড়িতে কিছু চিকিৎসক চিকিৎসাপত্রে সঠিক চিকিৎসা দিতে হিমশিম খান। চেম্বারের বাইরে অপেক্ষমাণ এসব রিপ্রেজেন্টেটিভ রোগীদের কাছে থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে মোবাইলে ছবি তুলে নিজ নিজ অফিসে সরবরাহ করেন। ওষুধ কোম্পানী ও মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভদের এসব তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। বর্তমান সরকার যদি সফলতার সাথে স্বাস্থ্য খাত আরো এগিয়ে নিতে চায়, তবে ওষুধের ভেজাল প্রতিরোধ করতে হবে। মান নিয়ন্ত্রণ ও ভেজালবিরোধী নজরদারি জোরদার করতে হবে।